বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার পটুয়াখালী জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন গত শুক্রবার ২৬ জুলাই, ২০১৯ ইং তারিখে পটুয়াখালী শিশু একাডেমীতে অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, আগামী একচল্লিশ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার মানুষ গড়ে তুলতে অভিভাবকদের প্রতি বক্তারা আহবান জানান।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাড. মোঃ শাহজাহান মিয়া এমপি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
আরো বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এস এম শাহজাদা এমপি, কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন এমপি, ডেইলি অবজারভারের পরিচালক, কিশোর বাংলার সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশারেরফ হোসেন পাকবীর, কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সভাপতি মিয়া মনসফ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মোহাম্মদ।
উদ্বোধনী পর্বে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ জাতীয় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলন উদ্বোধনের সূচনা করেন। তারপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। অতিথি ও শিশু কিশোরদের অংশগ্রহনে শুরু হয় র্যা লী। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে শিশু কিশোরদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে আলোচনায় অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ত্রিশ বছর আগে জাতির জনকের নামে বাংলাদেশে একমাত্র শিশু কিশোর সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো শিশু কিশোরদের প্রতিভা বিকাশে কাজ করার লক্ষ্যে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে চলেছে। এই সংগঠনের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে সারাদেশে। শিশু কিশোররা এই সংগঠনের সেবা গ্রহন করে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। তিনি শিশু সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মীর মোশাররেফ হোসেন পাকবীর বলেন, সংগঠনের ৩০ বছরের পথচলায় নতুন প্রজন্মের মেধা বিকাশে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছে। খেলাধুলা ও সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে গড়ে তুলছে মেধাবী প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শিশু কিশোরদের কাছে তুলে ধরে ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে সরব ছিল এই সংগঠন। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য্কর হয়েছে। কারো ইতিহাস বিকৃতির দুঃসাহস আর নেই। এখন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে যোগ্য নাগরিক গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্য অর্জনই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার এখন মূল কাজ।
এমপি এস এম শাহজাদা বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের রোড ম্যাপ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। সেই দিন বেশী দূরে নয়, উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাড়াবে।
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা পটুয়াখালী জেলার প্রথম প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন এমপি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা পটুয়াখালি শাখায় কাজ সুযোগ পাওয়ায় গর্ববোধ করি। তিনি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংগঠনিক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং অতীতের মতো এই সংগঠনের যেকোন প্রয়োজনে পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ।
কেন্দ্রীয় সভাপতি মিয়া মনসফ নবনির্বাচিত কমিটির সকল সদস্যকে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার নীতি আদর্শ মেনে চলে কেন্দ্রীয় নির্দেশ দায়িত্বের সাথে পালন করার আহবান জানান।
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মোহাম্মদ তাঁর বক্তব্যে পটুয়াখালী জেলা থেকে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত প্রতিযোগীদের সফলতা কামনা করেন।
আলোচনা শেষে এস এম শাহজাদা এমপি ও কাজী সুলতানা হেলেন এমপি নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষনা করেন।
তিন বছরের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এ্যাড. উজ্জ্বল বোস ও তরিকুল ইসলাম রুবেল।
জেলা পর্যায়ে জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বাছাই পর্বে বিজয়ীদের মাঝে সার্টিফিকেট ও শিশু কিশোর পত্রিকা ‘কিশোর বাংলা’র সৌজন্যে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় মেলার জেলা শিল্পীবৃন্দ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মুজাহিদুল ইসলাম প্রিন্স।