সংগঠন চালানোর জন্যে প্রতি জন কর্মী প্রতি মাসে ১০ টাকা সংগঠনের জন্য খরচ করবেন সিদ্ধান্ত নিন। ২০ জন কর্মী থেকে পাবেন ২০০ টাকা। উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষকমন্ডলীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা সংগ্রহ করবেন। অনুষ্ঠান করার জন্য আপনারা বাড়ীর আঙ্গিনা, বারান্দা বা উঠান বা স্কুল মাঠ ব্যবহার করতে পারেন। অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে। যেমন রচনা প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, হাতের লেখা-চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, গান ও নাচের প্রতিযোগিতা, বিষয় ভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা। অংশগ্রহণকারী থেকে ১ম, ২য়, ৩য় স্থান বিচারকের মাধ্যমে বাছাই করে বই পুরস্কার হিসেবে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। ১০০ টাকার মধ্যে ৩টি পুরস্কারের বই পার্শ্ববর্তী লাইব্রেরী থেকে সংগ্রহ করুন। বইগুলো জীবনীমূলক, শিক্ষামূলক, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমৃদ্ধ হলে ভাল হয়। আর বাকী ২০০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দিয়ে উপস্থিত শিশু কিশোরদের আপ্যায়ন করাবেন। বাকী ২০০ টাকা দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিকে চিঠি লেখা, পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়াসহ অন্যান্য খরচ করতে পারেন। আপনি অন্ততঃ একটি অনুষ্ঠান এই বাজেটে করে দেখুন। দেখবেন কত সুন্দর অনুষ্ঠান হয়। এ জাতীয় কার্যক্রমে একজন শিশু কিশোর অন্ততঃ ৫ বছর বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সেবা পেলে এসব শিশু কিশোর বড় হয়ে শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পথেই এগুবে।
আপনি এখন মনে করছেন এ–তো অনেক সময়ের ব্যাপার। কি লাভ হবে এভাবে সময় নষ্ট করে। জীবনের অনেকগুলো বছর রাজনীতি করে নষ্ট করে দিয়েছেন কিছুই পাননি। এই শিশু সংগঠন করে জাতির কিই বা উপকার হবে বা নিজে কী বা পাবেন তাই তো ভাবছেন ?
হ্যাঁ, রাজনীতি থেকে কিছু না পাবার বেদনাকে আজ আমরা ভুলে যাবো এই সংগঠনের মাধ্যমে। আপনি নিরাশ হবেন না। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাথে আপনি ভালভাবে নিজেকে জড়িয়ে নিন। আপনি মর্যাদা পাবেন, কোন অপবাদ পেতে হবে না এখানে। আপনার মাধ্যমে যে সব শিশু কিশোর মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে তারা আপনাকে স্মরণ করবে। আপনাকে সম্মান করবে। একদিন যখন আপনি সাংগঠনিক কাজ করতে অক্ষম হবেন তখন ঐ শিশু কিশোররা বড় হয়ে আপনার দায়িত্ব পালন করবে। আপনিও তাদের মধ্যে স্মৃতি হয়ে বেঁচে থাকবেন। জাতির জন্য শিশু কিশোররা সোনার মানুষ হিসেবে তৈরী হবে। আপনি ভাবছেন তাহলে অনেক আগেই শুরু করার দরকার ছিল ? না তা ঠিক নয়। এখনই সময় জেগে উঠার। তা শুরু করতে হবে এখনই। এখনো মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শী অর্থাৎ যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা সকলেই বেঁচে আছেন। তাঁদের স্মৃতিচারণে নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করবে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে ওদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত করুন। দেখবেন ওরা ওদের চলার পথে যদি কোন কাঁটা খুঁজে পায়, ওরা নিজেরাই তা নির্মূল করে দেবে। তাই আর বিলম্ব নয়, আজই আপনার শাখার কার্যক্রম গতিশীল করে বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী সৃষ্টি করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। আপনার সামান্য সময় নষ্ট, আর্থিক ক্ষতি ও চিন্তা চেতনায় একজন নতুন প্রজন্ম সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে নিঃসন্দেহে। তখন তারা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার দায়িত্ব নেবে। সেদিন বেশী দূরে নয়।
সাংগঠনিক বিষয়ক কার্যক্রম
সংগঠনের পরিধি বিস্তার ঘটানোই হচ্ছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। যে কোন সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে সাংগঠনিক কাজই হচ্ছে মূল ভিত্তি। যদি জাতীয় সংগঠন হয় তাহলে তার ব্যাপ্তি ব্যাপক। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেই শাখা করার মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এজন্যে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। সংগঠনকে ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটানো সুকঠিন হলেও সংগঠনের মূল আদর্শ ও উদ্দেশ্য সংগঠনের শাখা করতে উৎসাহীদের কাছে তুলে ধরতে পারলে অবশ্যই ততটা কঠিন নয়।
প্রক্রিয়া: প্রথমে গঠনতন্ত্র ও সাংগঠনিক কার্যক্রম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সম্যক ধারণা নিতে হবে। গঠনতন্ত্রের ধারা, উপ-ধারার বিষয়াদি জানতে, গঠনতন্ত্রের যে কোন বিষয় যাতে কর্মী বা শাখা গড়তে উৎসাহীদের কাছে ব্যাখ্যা করা যায় তার সম্যক ধারণা নিতে হবে। তারপর শাখা গড়তে উৎসাহী যে কোন কর্মী সংগ্রহ করতে হবে সর্বাগ্রে। সংগঠন করতে উৎসাহীদের মধ্যেও অনেকেই কর্মীর যোগ্যতা সম্পর্কে ধারণা থাকে না। যেমন, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা নাম দেখে অনেকেই ভাবেন শিশু কিশোররাই কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে। তা কিন্তু ঠিক নয়। শিশু কিশোরদের জন্যেই এই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কর্মী হিসেবে শিশু কিশোরদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বড়দেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। বড় বলতে কাজ করতে সক্ষম যে কেউ সংগঠনের দায়িত্ব নিতে পারেন। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আমরা কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে যে কোন বয়সের, যে কেউ বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার যে কোন শাখার যে কোন সম্পাদকীয় দায়িত্ব নিতে পারবে। তবে, সংগঠনের শৃংখলা ঠিক রাখার প্রয়োজনে সংগঠনের সভাপতি পদ থেকে সদস্য পর্যন্ত সিনিয়র জুনিয়র ঠিক রাখলে ভাল। তবে, সিনিয়র হলেও সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে উচ্চ পদে রেখে লাভ নেই। আবার বয়সে জুনিয়র অথচ সাংগঠনিক কাজ ও কর্মদক্ষতা ব্যাপক সেক্ষেত্রে তার কাজের মূল্যায়ন করতে হবে।
সাংগঠনিক কর্মী: কোন এলাকায় কোন নতুন শাখা গঠন করার লক্ষ্যে সর্বাগ্রে প্রয়োজন কয়েকজন সাংগঠনিক ও সক্রিয় কর্মী। তাকে অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে হবে এবং এলাকায় তার সামাজিক পরিচয় ও সুনামের অধিকারী হওয়া প্রাথমিক যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনায় আনতে হবে। ন্যায়পরায়ণ, নম্র, ভদ্র, সদালাপী ও বিশ্বাসী প্রভৃতি গুণাবলীই একজন কর্মীর যোগ্যতা বহন করে। তারপর সংগঠন করতে আগ্রহী হলে তাকে গঠনতন্ত্র ও সংগঠনের আদর্শ, উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করে প্রাথমিকভাবে আরো কয়েকজন কর্মী সংগ্রহের দায়িত্ব দিতে হবে। তারপর শাখা ভেদে প্রয়োজন সংখ্যক কর্মী সংগ্রহ হলে উর্ধ্বতন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ৩ মাসের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ ৩ মাসের বেশী নয়। ৩ মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মীদের নিয়ে। ঐ কমিটিকে উপযুক্ত উপদেশ, পরামর্শ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য একটি উপদেষ্টা ও পৃষ্ঠপোষক কমিটি গঠনতন্ত্র অনুসারে করে দিতে হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় অনুমোদন লাভের জন্য কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হবে। নবগঠিত কমিটিতে প্রদান উপদেষ্টা ও সভাপতির স্বাক্ষর কেন্দ্রীয় অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠাতে হবে। তারপর কেন্দ্রীয় কমিটি নবগঠিত শাখার নতুন কমিটি যাচাই বাছাই করে অনুমোদন দেবে এবং সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচয়পত্র সরবরাহ করবে। শাখা গঠনের সময় নতুন শাখার সকল কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির দেয়া পরিচয়পত্র শুধুমাত্র সাংগঠনিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে। শাখা অনুমোদন লাভের পর নির্ধারিত এলাকায় শিশু কিশোরদের কল্যাণে নবগঠিত শাখাকে কাজ করতে হবে। প্রয়োজনে সামাজিক কাজও করতে হবে। যেমন বন্যা, খরা বা যে কোন দূর্যোগে তখন কমিটির কর্মীরা জনসাধারণের সেবায় এগিয়ে আসেত হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে তারপর শিশু কিশোরদের কল্যাণে শাখার কর্মকর্তাদের কাজ করতে হবে। শিশুদের কল্যাণে কাজগুলো হচ্ছে- প্রতিভা বিকাশে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালু করা। যেমন- নাচ, গান আবৃতি, অভিনয়সহ প্রতিভা বিকাশে যে কোন বিষয়। এভাবে একটি শাখার কার্যক্রম পরিচালিত হবে ধারাবাহিকভাবে। এই কার্যক্রম পরিচালিত হওয়াই হচ্ছে সাংগঠনিক কাজ।
দপ্তর বিষয়ক কার্যক্রম
সংগঠনের দাপ্তরিক কাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দপ্তরের যে কোন কাজের বিভিন্ন কাগজপত্র সংরক্ষণ, তদারকি ও তৈরী করাই দপ্তরের সবচেয়ে জরুরী কাজ। সংগঠনের বিভিন্ন কাজের রিপোর্ট অত্যন্ত যত্ন করে রাখা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ ব্যাপারে দাপ্তরিক কাজের প্রাথমিক ধারণা নিয়ে এ দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। দপ্তরের যাবতীয় কাজের রিপোর্ট সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন অফিসিয়াল উপকরণ প্রথমে ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন- ফাইল কেবিনেট, ফাইল, প্যাড, সাধারণ কাগজ, ষ্টাবলার, পিন, কলমসহ দাপ্তরিক কাজের উপকরণ হিসেবে যা প্রয়োজন সব পূর্বেই ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কার্যক্রমের বিস্তারিত রিপোর্ট যথাসময়ে তৈরী করে সংরক্ষণ করা যায়।
যা যা সংরক্ষণ করতে হবে: শাখা কর্তৃক যে কোন কার্যক্রমের রিপোর্ট, প্রেস বিজ্ঞপ্তি, আলেকচিত্র, ভিডিও ক্যাসেট, অডিও ক্যাসেট, ম্যাগাজিন, সিডি, ভিসিডি, কেন্দ্রীয় কমিটির কাগজপত্র, অনুমোদন পত্র প্রভৃতি কার্যক্রম বিষয়ক যে কোন প্রমাণাদি সংরক্ষণ করবে। উপরোক্ত ডকুমেন্টস সংরক্ষণের জন্য একটি ৪ বা ৫ স্তরের ফাইল কেবিনেট হলে সবচেয়ে ভাল হয়। এছাড়া ষ্টীলের আলমারীরও ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ফাইল কেবিনেট বা আলমারীতে কোন্ কাগজপত্র কোন্ কেবিনেটে রাখা হয়েছে তা আলাদাভাবে কেবিনেটের বাইরে উল্লেখ করতে হবে। যাতে পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষণিক খুঁজে বের করা যায়। দপ্তর সম্পাদক যে সকল কাগজপত্র সংরক্ষণে রাখবেন তা অবশ্যই সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করা সাংগঠনিক দায়িত্ব।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করা দপ্তর বিষয়ক কাজ। অর্থাৎ দপ্তর সম্পাদক প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করবেন এবং পত্রিকা বা সংবাদ মাধ্যমে দপ্তর সম্পাদকের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। তবে দপ্তর সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক বা অন্য যে কেউ এই দায়িত্ব পালন করতে পারেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করার নিয়মও জানতে হবে সংশ্লিষ্ট সম্পাদককে। যাতে করে সংবাদপত্র বা যে কোন মিডিয়ায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারে আগ্রহী হয়।
প্রেস বিজ্ঞতি লেখার নিয়ম: শাখা কর্তৃক কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলে, প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করার জন্য দায়িত্ব দিতে দপ্তর সম্পাদক বা যে কোন একজনকে পুরো অনুষ্ঠানের একটি রিপোর্ট তৈরী করতে হবে। যেমন- প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, আলোচক ও সভাপতির নাম নির্র্ভুলভাবে নোট করতে হবে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ কে কি বললেন তাও সংক্ষিপ্তভাবে লিখে নিবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে অংশগ্রহণকারী সকলের নামও লিখে নিতে হবে। তারপর সংগঠনের প্যাডে অত্যন্ত সংক্ষিপ্তকারে সুন্দর হস্তাক্ষরে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ যদি সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব হন, তাহলে তাঁর বক্তব্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তির নমুনা:
গত ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সারাদেশের শাখা সমূহে পালন করা হয়। কর্মসূচীর মধ্যে ছিল আলোচনা, মিলাদ মাহফিল, কাঙ্গালী ভোজ, মানববন্ধন ও শোক র্যালী। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা মতিঝিল শাখা এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অত্র এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন আহম্মেদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মতিঝিল শাখার প্রধান উপদেষ্টা নিজামুদ্দিন, উপদেষ্টা সাইফুদ্দিন আহমেদ, এডভোকেট রহমত উল্লা, বেলাল উদ্দিন মনি প্রমুখ। আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির জনকের খুনীদের ফাঁসির রায় অবিলম্বে কার্যকর করার দাবী জানান এবং বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কর্মীদের নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য তুলে ধরার আহবান জানান।
আলোচনা শেষে শাখার শিল্পীরা শোকের গান ও কবিতা আবৃতিতে অংশ নেয়। শোকের গান ও আবৃতিতে যারা অংশ নেয় তারা হলো- শিউলি, তিথি, নাইম, পুলক, মুকতাদীর, শিমুন, লিটু, জোহা ও আবুল কালাম।
স্বাক্ষর
দপ্তর সম্পাদক
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা
মতিঝিল শাখা।
উপরে উল্লিখিত নমুনার প্রেস বিজ্ঞপ্তি তৈরী করে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, সাপ্তাহিক পত্রিকাসহ সংবাদ মাধ্যমে প্রেরণ করতে হবে। সংবাদ প্রকাশিত হলে সংবাদপত্রের সংবাদ সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত খাতায় পত্রিকা দেখে কেটে তারিখ উল্লেখ করে লাগিয়ে রাখতে হবে।
প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক কার্যক্রম
সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য প্রচার ও প্রকাশনার ভূমিকা অপরিসীম। প্রচার ও প্রকাশনার মাধ্যমে সবাইকে যেমন দ্রুত সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা যায়। তেমনি সংগঠনের কার্যক্রমের একটি প্রামাণ্য দলিল বহন করে সংগঠনের বিগত কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত এই প্রকাশনা।
প্রচার
প্রচারের জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করা হয় যেমন বিভিন্ন রঙে হাতে লেখা ছাপানো পোষ্টার, লিফলেট, মাইকিং। তবে ইদানিং কম্পিউটার ও ফটোষ্ট্যাট অত্যন্ত সহজসাধ্য বিধায় কোন শাখার সাংগঠনিক এলাকা ছোট হলে কম্পিউটারে সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান বা কার্যক্রমের উপর একটি কম্পিউটার থেকে লিফলেটের সাইজ মোতাবেক কম্পোজ করে বেশকিছু ফটোষ্ট্যাট করে বিভিন্ন এলাকায় হাতে হাতে বিলি করে, দেওয়ালে লাগিয়ে প্রচার করা যায়। এ ছাড়া শাখা যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে তা প্রচারের জন্য রঙিন পোষ্টার কাগজ কিনে সংগঠনের কর্মীদের যার হাতের লেখা সুন্দর তাকে পোষ্টার লেখার দায়িত্ব দেয়া যায়। তারপর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সবাই মিলে লাগানো যায় অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে। এছাড়া অনুষ্ঠান সংক্রান্ত তাৎক্ষণিক প্রচারের জন্য এলাকায় মাইকিং করাও যেতে পারে। মাইকিং করার পূর্বে প্রশাসনিক দপ্তর থেকে অনুমতি নেয়া প্রয়োজন হতে পারে।
প্রকাশনা
সংগঠনের জন্য প্রকাশনা খুবই জরুরী। কেননা কোন শাখা দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার পর ঐ শাখার বিভিন্ন কার্যক্রমের রিপোর্টসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আলোকচিত্রসহ মেলার উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষকবৃন্দের বাণী নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশিত হলে শাখার কার্যক্রমের একটি প্রামাণ্য দলিল সংরক্ষিত হয়। যে কাউকে সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করতে একটি সংকলনই যথেষ্ট। যদিওবা সংকলন প্রকাশ করা কিছুটা ব্যয় সাপেক্ষ। এ ব্যাপারে উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক ও কর্মকর্তাদের যৌথসভায় সিদ্ধান্ত নিলে সংকলন প্রকাশ সহজতর হবে। সংকলনের জন্য অবশ্যই বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করা যাবে। যৌথসভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিজ্ঞাপনের মূল্য কত নির্ধারণ করতে হবে। উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক বা কর্মকর্তাদের পরিচিত যে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিজ্ঞাপন দিতে সক্ষম হলে বিজ্ঞাপনের জন্য অনুরোধ করা যায়। মনে রাখতে হবে জোর করে বা কোন ধরণের প্রভাব খাটিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ। বিজ্ঞাপন ফরম তৈরী করে বিজ্ঞাপনের জন্য আবেদন করা যায়।
বিজ্ঞাপন ফর্মের নমুনা
শ্রদ্ধাভাজন
পরিচালক
আবুল হোসেন অয়েল মিলস লিঃ
ঢাকা।
বিষয় ঃ বিজ্ঞাপনের জন্য আবেদন।
জনাব,
আগামী ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা গৌরীপুর শাখা এক সংকলন প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
উক্ত সংকলনের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে সংকলন প্রকাশে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
পূর্ণ পৃষ্ঠা – ৩০০০.০০ টাকা
অর্ধ পৃষ্ঠা – ১৫০০.০০ টাকা
১/৪ পৃষ্ঠা – ৫০০.০০ টাকা
বিনীত
সভাপতি
বিজ্ঞাপন দাতার স্বাক্ষর গৌরীপুর শাখা
প্রকাশনার লেখা ঃ প্রকাশনার জন্য অবশ্যই কিছু লেখা সংগ্রহ করা যাবে। যেমন- প্রবন্ধ, জীবনী, গল্প, ছড়া, কবিতা, অনুষ্ঠানের বিভিন্ন আলোকচিত্র, বিশেষ ব্যক্তিত্বের বাণী। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক সুচারুভাবে প্রকাশিতব্য সংকলনের দায়িত্ব পালন করবেন এবং নির্ভূল ও চমৎকার একটি সংকলন উপহার দেবেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট শাখার সকল কর্মকর্তাকে অবশ্যই সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে। সংকলন প্রকাশিত হলে বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিশু সংগঠন, বিজ্ঞাপন দাতা, এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটিসহ আপনার পার্শ্ববতী শাখা সমূহেও সৌজন্য কপি দিতে পারেন। তাতে অন্য শাখাগুলোও সংকলন প্রকাশে উৎসাহ পাবে এবং সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ব্যাপক প্রচার হবে।
কি কি প্রয়োজনে প্রচার: কোন শাখা যখন শিশু কিশোরদের জন্য কোন অনুষ্ঠান যেমন- ছবি অংকন, গান, নৃত্য, আবৃতি, রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তখন প্রচারের প্রয়োজন সর্বাধিক। তখন বিভিন্ন স্কুল, সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়সহ পাড়া মহল্লায় প্রচারের প্রয়োজন হয়। এ জন্য হাতে লেখা পোষ্টার ও লিফলেট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বিস্তারিত নিয়মাবলী উল্লেখ করে প্রচার করা যায়। তাতে শিশু কিশোররা বিস্তারিত নিয়মাবলী অবহিত হবে এবং প্রতিযোগিতা বা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সম্পুর্ণ ধারণা পাবে। এছাড়া হাতে লেখা পোষ্টারও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পোষ্টার অবশ্যই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সঙ্গীতালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেখানে জনসমাগম বেশী, শিশু কিশোর বা অভিভাবকদের সহজে নজর পড়ে সে সব স্থানে লাগাতে হবে। তবে প্রচার কাজ চালানোর পর যে স্থানে যোগাযোগ করতে বলা হবে সেই স্থানে দায়িত্বশীল কর্মীকে দায়িত্ব দিতে হবে যাতে অনুষ্ঠান সংক্রান্ত তথ্য অভিভাবক বা শিশু কিশোরদের সরবরাহ করতে পারে এবং কোন প্রতিযোগী শিশু কিশোর ও অভিভাবক কোন ধরণের বিভ্রান্তিতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, এতে সংগঠনের সুনাম ক্ষুন্ন হয়।
অর্থ বিষয়ক কার্যক্রম
একটি সংগঠন পরিচালনার জন্য অর্থই হচ্ছে সবচেয়ে প্রয়োজন। অর্থের ব্যবস্থা না হলে সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বলা যায় অর্থের অভাব হলে কোন কার্যক্রমই পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সব কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে থাকবে। এ জন্য অর্থের দিকটা সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হয়। অর্থের ব্যবস্থা সহজসাধ্য করার সুবিধার্থে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার গঠনতন্ত্রে পৃষ্ঠপোষকমন্ডলী রাখা হয়েছে সংগঠনের সর্বস্তরে। সমাজের অবস্থাসম্পন্ন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের দিয়ে গঠন করতে হবে পৃষ্ঠপোষকমন্ডলী। এছাড়া উপদেষ্টামন্ডলীও অর্থের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারেন। একটা দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যে কোন সংগঠন সেটি সাংস্কৃতিক সংগঠন হোক, শিশু সংগঠন বা রাজনৈতক সংগঠন হোক না কেন, সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে যদি চাঁদাবাজির আশ্রয় নেয় সেই সংগঠন কখনো জনকল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারে না। সেই সংগঠন জনগণের কাছে মূল্য পায় না। তাই অর্থের ব্যাপারটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় সংগঠন পরিচালনার জন্য অর্থের ব্যবস্থা উপদেষ্টামন্ডলী, পৃষ্ঠপোষকমন্ডলী, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা মিলে করতে হবে।
প্রথমে কমিটির সবাই যৌথসভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংগঠন পরিচালনার জন্য মাসিক খরচের ব্যবস্থা করতে কমিটির সবার কাছ থেকে মাসিক চাঁদা নির্ধারণ করতে হবে। এই চাঁদা উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক কর্মকর্তা সবাই মিলে দেবেন। আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করতে হবে চাঁদার হার। কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ বেকার, কেউ ছাত্র, কেউ চাকুরীজীবি থাকতে পারেন। সবার পক্ষে ধার্যকৃত চাঁদা দেওয়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে বেকার কর্মীরা। মাসিক এমন একটি চাঁদা উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক ও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নির্ধারণ করতে হবে যাতে ধার্যকৃত চাঁদা দিতে কারো যাতে অসুবিধা না হয়। অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে শুধু অফিসিয়াল কাজ পরিচালনার জন্য যে চাঁদা নির্ধারণ করা যেতে পারে তা ২০ টাকা প্রতিজন নির্ধারণ হলে উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক ও কর্মকর্তা মিলে যদি ২৫ জন হয়, তাহলে ৫০০ টাকা সংগৃহীত হবে। এই পাঁচশত টাকা দিয়ে কিন্তু অনেক কাজ করা যায়। যা একটি সংগঠনকে সক্রিয় রাখতে যথেষ্ট। যেমন প্রতিমাসে ৫০০ টাকা সংগৃহীত হলে প্রথমে অফিসিয়াল কাজ পরিচালনা করতে কিছু অফিসিয়াল জিনিষপত্র কিনতে হবে যেমন- রেজিষ্টার খাতা, কয়েকটি ফাইল, কলম, গাম, খাম, চিঠি বা কাগজপত্র রাখার ২টি বক্স, শাখার প্যাড, ইত্যাদি। এসব জিনিষপত্র প্রতিমাসে অল্প অল্প কিনলেই যথেষ্ট। শিশুদের নিয়ে কম খরচে ঘরোয়া অনুষ্ঠান করা যায় যাতে খরচ কম অথচ কার্যকর। আপনার শাখার উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষক বা কর্মকর্তার বাড়ীর বারান্দা বা কোন কক্ষে একদিন আপনাদের এলাকার শিশু কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের আসতে বলবেন, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃতি প্রতিযোগিতা বা গল্প বলা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। শ্রেণী বা বয়স মোতাবেক গ্রুপ তৈরী করবেন। কুইজ প্রতিযোগিতা মুক্তিযুদ্ধের উপর হবে। শিশু কিশোর যারা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করবেন তাদেরকে এই পুরস্কার দেয়া হলো, প্যাডে সার্টিফিকেট দেয়া হলো এবং উপস্থিত সকল শিশু কিশোরকে সামান্য আপ্যায়ণের ব্যবস্থা করা হলো। এতে প্রাথমিক পর্যায়ে যদি ১০/১৫ জন এলাকার শিশু কিশোর অংশ নেয় পরবর্তীতে তাদের মাধ্যমে শিশু কিশোরদের মাঝে এই প্রতিযোগিতার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তাদের মাধ্যমে আপনার শাখা আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা ব্যাপক হয়ে পড়বে। উপরোল্লিখিত কার্যক্রম কয়েক মাস করে দেখুন তাহলে ধারণা পাবেন কতটুকু অর্থের প্রয়োজন হয়। আসলে কর্মীদের ধারাবাহিকভাবে শিশুদের কল্যাণে এই পরিমাণ অর্থ খরচে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে অভ্যস্থ হলে, বাংলাদেশের আটষট্টি হাজার গ্রামে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক তৈরী হবে। আমাদের অভ্যেস করতেই হবে এ জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে। গ্রামে গঞ্জে শিশুদের কল্যাণে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠান আয়োজনে অর্থের ব্যবস্থা: আপনার শাখার মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হবে বিভিন্ন উপলক্ষে। যেমন- জাতির জনকের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস, শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, জাতীয় শোক দিবস, বিশ্ব শিশু দিবস, বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন কর্মসূচী নিতে হলে অর্থের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্যে উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষক ও কর্মকর্তাদের যৌথ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রথমে অনুষ্ঠানের ধরণ নির্ধারণ করে বাজেট তৈরী করতে হবে। অনুষ্ঠানের খরচের খাতগুলি কি কি তা নির্ধারণ করে প্রতিটি খাতের সম্ভাব্য খরচ নির্ধারণ করতে হবে। যেমন- ডেকোরেশন, আমন্ত্রণপত্র তৈরী, মাইক, আপ্যায়ন, পুরস্কার, যাতায়াত খরচ প্রভৃতি এক একটি খাত। প্রতিটি খাতের খরচ বহন করার জন্য আপনার এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি ও এই সংগঠনের শুভাকাংখী বা উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষকদের কাছে আবেদন করতে হবে দরখাস্তের মাধ্যমে। আপনার সংগঠনের বিভিন্ন শিশুদের কল্যাণমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি অবহিত হলে অবশ্যই সহযোগিতার হাত বাড়াবেন। যাঁর কাছে সাহায্য পাইবেন তাকে বিগত দিনের আপনার শাখার শিশুদের কল্যাণে গৃহীত কার্যক্রমগুলোর ফটোকপি করে দরখাস্তের সাথে দিতে পারেন। এভাবে যদি একজন সচ্ছ্বল শুভাকাংখীকে অনুরোধ জানানো হয় তাহলে সহযোগিতা না পাওয়ার কথা নয়।
সহযোগিতা চেয়ে যে দরখাস্ত লিখবেন তার নমুনা নিচে দেয়া হলো।
শ্রদ্ধাভাজন
জনাব আবদুল গফুর হাওলাদার
চেয়ারম্যান
কাইয়ুম টেক্সটাইল মিল্স লিঃ
বিষয়: বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা অনুষ্ঠানে সহযোগিতার আবেদন।
জনাব,
সালাম নেবেন। আগামী ১৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা গৌরীপুর শাখা শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। উক্ত অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে আয়োজন করার লক্ষ্যে আপনার সর্বাত্মক সাহায্য কামনা করছি। আপনি একজন সমাজের দানশীল ব্যক্তি হিসেবে শিশুদের এই অনুষ্ঠানের ডেকোরেশনের/ মাইকের/আপ্যায়নের দায়িত্ব আপনার পক্ষ থেকে গ্রহণ করার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, শিশুদের প্রতিভা বিকাশে আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবো। আপনার মঙ্গল কামনা করি।
বিনীত
স্বাক্ষর স্বাক্ষর
সভাপতি সাধারণ সম্পাদক
খরচের হিসাব নিকাশ ঃ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সংগৃহীত অর্থ ও খরচ অনুষ্ঠান শেষে সুন্দর করে ভাউচারসহ হিসাব রাখতে হবে এবং সাথে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে খরচের ব্যাপারে অবহিত করে ফাইল করে রাখতে হবে। অনুষ্ঠানের যদি বাড়তি টাকা থাকে তাহলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যাংকের একাউন্ট রেখে দিতে হবে। এভাবে সংগঠনের অর্থের ব্যবস্থা করে সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক কার্যক্রম
সংগঠনের প্রাণ হচ্ছে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সংগঠনের গতি সঞ্চার করে। কর্মী সৃষ্টি করে। সর্বোপরি কর্মীদের প্রতিভা বিকাশের একটি সক্রিয় মাধ্যম। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের আওতায় যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় সংগীত, নৃত্য, আবৃতি, নাটক, চিত্রকলা প্রভৃতি। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক আজ সারাদেশে বিসত্মৃৃতি লাভ করার মধ্যে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ভূমিকা সবচেয়ে অগ্রগণ্য। সাংস্কৃতিক মাধ্যমে যতটুকু জয় করা যায় অন্য কোন মাধ্যমে তা সহজে করা যায় না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা অস্ত্র হাতে যখন শত্রুর মোকাবেলায় রত যুদ্ধ ময়দানে, তখন সাংস্কৃতিক কর্মীরা জাতির এই সংকটময় মূহুর্তে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস যোগায়। সংগীত, নাটক, কবিতার মাধ্যমে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াকু ভূমিকা রাখে, যা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সেই গান আজো আমাদের শিহরণ জাগায়, চেতনা সৃষ্টি করে। তাই বাঙালি সাংস্কৃতি আজো মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় আমাদের সাহস যোগায়, অনুপ্রেরণা যোগায়।
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সকল শাখায় ব্যাপক কার্যক্রম নিয়ে থাকে। এ লক্ষ্যে শাখা গঠনের প্রথম কার্যক্রম হিসেবে প্রথমেই শিশু কিশোরদের নিয়ে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ রয়েছে। কেননা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম যত সহজেই সবাইকে আকৃষ্ট করে অন্য কোন মাধ্যমে তা সম্ভব নয়। কোন একটি বিষয় নিয়ে জনসভা/আলোচনায়, সেমিনার সিম্পোজিয়ামে যে আলোচনা হয় তাতে দর্শক শ্রোতার যতটুকু আগ্রহ থাকে না, একই বিষয় নিয়ে গান, আবৃতি নাটকের আয়োজন করা হলে দর্শক শ্রোতার সমাগম ঘটে সবেচেয়ে বেশী। সে কারণে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সাংস্কৃতিক মাধ্যমকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে থাকে। সংগঠনের সকল শাখার পক্ষে সংস্কৃতির সকল বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করা কখনো সম্ভব নয়। এ জন্য নতুন শাখা গঠনের পর তাদের পছন্দ ও সাধ্য অনুযায়ী যে কোন একটি বিষয় শিশু কিশোরদের নিয়ে শুরু করা যেতে পারে যেমন- নাটক, কবিতা, সংগীত, নৃত্য, অংকন প্রভৃতির যে কোন একটি।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শুরু করার স্থান: শিশু কিশোরদের সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত নিরিবিলি জায়গা প্রয়োজন। নিজস্ব জায়গা না থাকলে কোন স্কুল বা কারো বাসা বাড়ীতে বড় কক্ষে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী শুরু করা যেতে পারে। যেখানে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে সেই স্থানে ‘‘বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংস্কৃতিক কার্যক্রম” সাইন বোর্ড টাঙ্গানো যেতে পারে। তারপর যেখান থেকে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করবেন, সেখানে প্রচারপত্র বা হাতে আঁকা পোষ্টার লাগিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে এবং যে কোন সুবিধা অনুযায়ী তারিখে শিক্ষার্থীদের আসতে বলতে হবে। যে সকল শিশু কিশোর শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণে অংশ নেবে তাদের বায়োডাটা রাখা প্রয়োজন। যাতে একজন শিক্ষার্থীর পূর্নাঙ্গ পরিচয় জানা যায়। প্রয়োজনে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরিচয়পত্র তৈরী করে দেয়া যেতে পারে, যাতে তারা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা পরিচালিত সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের পরিচয় বহন করে।
সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার উপকরণ: সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপকরণ হিসেবে যা কিছু প্রয়োজন তা অবশ্যই পূর্বেই ব্যবস্থা করে প্রশিক্ষক রাখতে হবে। সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হলে সুবিধা হয়। কেননা তাতে তেমন পারিশ্রমিক দিতে হয় না। উপকরণ হিসেবে যা প্রয়োজন হারমোনিয়াম, তবলা, নৃত্যের জন্য টুইনওয়ান প্রভৃতি। এসব উপকরণ অবশ্য প্রশিক্ষণ শুরু করার পূর্বেই ব্যবস্থা করে রাখতে হবে।
প্রশিক্ষণ শুরুর সময় বা তারিখ: শিক্ষার্থীদের সুবিধা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের তারিখ ও সময় নির্ধারণ করতে হবে। প্রশিক্ষণ চলাকালে প্রশিক্ষক ও শিক্ষার্থী ছাড়া আর কেউ যাতে কাছাকাছি না থাকে। তাতে প্রশিক্ষণের সমস্যা হয়।
প্রশিক্ষণের ধরণ ও বিষয়: যে বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে তা অবশ্যই শিশু কিশোর উপযোগী হতে হবে এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের সাংস্কৃতিক বিষয়ক বিভিন্ন সংগীত, নৃত্য, কবিতা, নাটক প্রভৃতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিতে হবে, যাতে শিশুরা সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠে। বাঙ্গালী শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চায় যাতে শিশু কিশোররা আগ্রহী হয়। শিক্ষার্র্থীরা মোটামুটি সংগীত, নৃত্য, আবৃতি বা অভিনয়ে পারদর্শী হলে তাদেরকে কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আস্তে আস্তে অভ্যস্ত হয়। শিক্ষার্থীরা যেহেতু বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সদস্য হয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সেহেতু বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের কেরিয়ার গড়ে তুলতে সচেষ্ট হবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক যখন প্রতিটি বিষয়ে তার ধারণা হবে তখন সেই শিশু কিশোর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে। শিশু কিশোর শিল্পীদের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে এলাকার সংগঠনের কার্যক্রমের সুনাম সর্বমহলে প্রচারিত হবে। এলাকার শিশু কিশোর উৎসাহভরে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণে অংশ নেবে। সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের নিয়মাবলী ও প্রশিক্ষকের নাম প্রচারপত্রে উল্লেখ করে শিক্ষার্থী বা এলাকায় জানাতে হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন “বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা” আজ সারা দেশের শিশু কিশোরদের প্রিয় সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে। বিশেষ করে দেশের যেখানে এই সংগঠন গড়ে উঠেছে এবং ঐ শাখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন উপলক্ষে শিশু কিশোর জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন বিষয়ের উপর এই প্রতিযোগিতা প্রথমে বিভিন্ন শাখায় এবং পরে জেলা ভিত্তিক আয়োজনের পর চূড়ান্তভাবে ঢাকায় আয়োজন করা হয় চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এভাবে আজ শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সারা দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় শিশুদের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষণীয়। এতে জাতীয় শিশু দিবসে শিশুদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত শিশু কিশোরদের জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক শাখার শিশু কিশোর প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা সকল শাখার সাংগঠনিক দায়িত্ব। যদি সকল বিষয়ে অংশগ্রহণ সম্ভব নাও হয় অন্ততঃ যে কটি বিষয়ে সম্ভব অংশ নেয়া যাবে। মফস্বল এলাকার শিশু কিশোর প্রতিযোগী সংখ্যা কম হতে পারে। প্রয়োজনে একটি বিষয়ে একজন প্রতিযোগী হলেও অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন।
জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিষয়
সংগীত : রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, দেশাত্ববোধক গান, ছড়া গান, পল্লীগীতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান।
নৃত্য : সাধারণ ও লোকনৃত্য।
আবৃতি, অভিনয়, চিত্রাংকন, হাতের লেখা।
বিভাগ বিন্যাস
প্রথম শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী – ক গ্রুপ
৪র্থ শ্রেণী থেকে ৭ম শ্রেণী – খ গ্রুপ
৮ম শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী – গ গ্রুপ
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় – ঘ গ্রম্নপ
জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রাথমিক কাজ
জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক স্তর শাখা কর্তৃক আয়োজিত বাছাই প্রতিযোগিতা। বাছাই প্রতিযোগিতায় প্রতিটি বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকারী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার সুযোগ পাবে। গ্রাম বা থানা পর্যায়ের প্রতিযোগীরা জেলা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে শুধুমাত্র জেলা আয়োজিত বাছাই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা অংশ নিতে পারবে। বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রত্যেক প্রতিযোগীকে প্রতিটি বিষয়ের অংশগ্রহণ ফরম পূরণের মাধ্যমে অংশ নিতে হবে। অংশগ্রহণ ফরম সংগ্রহ করতে হবে শাখার কাছ থেকে। শাখাতে ফরম সরবরাহ করবে কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা। জানুয়ারী মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় মেলা ফরম প্রত্যেক শাখায় চাহিদা অনুযায়ী কুরিয়ার সার্ভিস বা ডাকযোগে প্রেরণ করবে। সাথে প্রেরণ করবে প্রচারপত্র। ফেব্রুয়ারী মাসের মধ্যে বাছাই প্রতিযোগিতা সমাপ্ত করে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের তালিকা প্রেরণ করতে হবে। তারপর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের নিয়মাবলী
কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা আয়োজিত জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী ও বাছাই প্রতিযোগিতা আয়োজকদের প্রতি কয়েকটি পরামর্শ ও নিয়মাবলী।
১। বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণকারীদের জন্য শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় মেলা কর্তৃক প্রেরিত ফরম পূরণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কোন কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি ফরম সরবরাহে ব্যর্থ বা অপারগ হলে, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটি শাখাগুলোকে নিজেরা ফরম তৈরী করে বাছাই প্রতিযোগিতা আয়োজনের নির্দেশ পত্র দেবে।
২। প্রতিটি ফরমের মূল্য কেন্দ্রীয় মেলা কর্তৃক নির্ধারণ করা হবে। কোন অবস্থাতেই কেন্দ্রীয় মেলা নির্ধারিত ফি’র বেশী নেয়া যাবে না।
৩। প্রতি ফরম বাবদ ৫ টাকা হারে প্রিন্টিং খরচ হিসেবে কেন্দ্রীয় মেলাকে দিতে হবে। এই নিয়ম সকল শাখা যথাযথভাবে পালন করবেন।
৪। কেন্দ্রীয় মেলা কর্তৃক প্রেরিত ফরম শেষ হয়ে গেলে সাথে সাথে বিক্রিত ফরমের টাকা কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফরমের জন্য আবেদন করতে হবে। কেন্দ্রীয় মেলা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঐ শাখায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আবেদনপত্রে উল্লেখিত ফরম পাঠিয়ে দেবেন।
৫। কোন জেলা বা শহর শাখা প্রতিযোগিতা আয়োজনে অক্ষম হলে বা প্রতিযোগীর সংখ্যা কম হলে নিকটবর্তী জেলা বা শহর শাখা আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে। কিন্তু প্রতিযোগিতা আয়োজন না করে ২/৪ জন প্রতিযোগীর নাম কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠিয়ে দিলে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হবে না।
৬। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীকে নিজ দায়িত্বে ঢাকায় থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
৭। বাছাই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নামের তালিকা ৫ মার্চের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠাতে হবে।
৮। প্রতিটি শাখাকে মেলার উদ্বোধনী সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা উচিত। বাছাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকল শিল্পীদের নিয়ে উদ্বোধনী সংগীত তৈরী করা যাবে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার প্রথমেই উদ্বোধনী সংগীত প্রতিযোগিতা হবে।
৯। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিচারক মন্ডলী যারা থাকবেন তাদেরকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। যেমন- সুরকার, সংগীত শিক্ষক, সংগীত শিল্পী, অভিনেতা, নৃত্য শিল্পী বা নৃত্য পরিচালক ও চিত্র শিল্পী।
১০। বাছাই প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে শুধুমাত্র জেলা, মহানগর ও শহর শাখা। শাখা কর্তৃক আলাদাভাবে বাছাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করলেও জেলা, মহানগর ও নগর শাখা আয়োজিত প্রতিযোগিতায় আবার অংশগ্রহণ করে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় আসতে হবে।
১১। যে সকল জেলায় জেলা/মহানগর ও শহর শাখা রয়েছে প্রতিটি শাখা আলাদা আলাদাভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারবে। তবে কোন প্রতিযোগী দুই জায়গায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। একজন প্রতিযোগী দুই জায়গায় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ প্রমাণিত হলে ঐ প্রতিযোগীর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ বাতিল করে দেয়া হবে।
১২। একজন প্রতিযোগী শুধুমাত্র ২টি বা ৩টি বিষয়ে অংশ নিতে পারবে।
১৩। প্রতিযোগীরা সত্যায়িত ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবিসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত পঠিত শ্রেণীর প্রমাণের সনদপত্রসহ চূড়ান্তভাবে শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শনাক্ত করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে ৫ মার্চের মধ্যে পাঠাতে হবে।
১৪। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সরঞ্জাম নিজেরাই সঙ্গে আনবে। তবে হারমোনিয়াম, তবলা, নৃত্যের ক্ষেত্রে রেকর্ড প্লেয়ার, চিত্রাংকনের কাগজ মেলার পক্ষ থেকে দেয়া হবে।
১৫। একাধিক প্রতিযোগী একই স্থান অধিকার করলে পুনরায় এক স্থানের জন্য একাধিক প্রতিযোগীর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে একজনই নির্ধারণ করে পাঠাতে হবে।
১৬। কেন্দ্রীয় প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে অংশগ্রহণকারীকে সাদা সার্ট ও সাদা প্যান্ট/সাদা স্কার্ট ও পায়জামা তৎ সাথে ব্যাজ পরিধান করে আসতে হবে। ব্যাজ শাখা কর্তৃক সংগ্রহ করতে সক্ষম না হলে কেন্দ্রীয় মেলা থেকে নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করা যাবে।
১৭। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের নির্ধারিত বিচারকমন্ডলী কর্তৃক ঘোষিত ফলাফল চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। এতে কারো কোন অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না।
১৮। প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে।
১৯। কেন্দ্রীয় মেলা কর্তৃক প্রেরিত লিফলেট ফরম প্রেরণের পর আপনার এলাকার শিশু একাডেমী/শিল্পকলা একাডেমী/বেসরকারী সংগীত একাডেমী ও বিভিন্ন স্কুলে বিলি করবেন।
২০। আপনার এলাকা থেকে প্রকাশিত সকল দৈনিক ও সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে কেন্দ্রীয় মেলা প্রেরিত লিফলেট দেবেন এবং বাছাই প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত সংবাদ নিয়মিতভাবে প্রকাশ করবেন।
২১। প্রতিযোগিতা সংক্রান্ত কোন শাখার কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় মেলায় লিখিতভাবে পাঠাবেন।
২২। কেন্দ্রীয় মেলা কোন কারণে লিফলেট প্রেরণে ব্যর্থ হলে প্রত্যেক শাখা নিজ দায়িত্বে প্রচার কাজ চালাবেন। বাছাই প্রতিযোগিতা নিয়ে কোন অভিযোগ যাতে কেউ করতে না পারে, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
যে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি
জাতীয় শিশু দিবস, জাতীয় সাংস্কৃতিক বাছাই প্রতিযোগিতা শাখার সম্মেলনসহ যে কোন অনুষ্ঠান আয়োজনের লক্ষ্যে কার্যকরী কমিটির সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনুষ্ঠান সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি আলোচনা করে যেমন, বাজেট, অনুষ্ঠানের ভেন্যু, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি নির্বাচন সবকিছু পূর্বেই ঠিক করে নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকল কর্মীকে অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সভাপতি বিশেষ তাগাদা দেবেন। উপদেষ্টা, পৃষ্ঠপোষক, শুভাকাংখীদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও নিশ্চিত করতে হবে। তারপর একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করতে হবে। প্রস্তুতি কমিটির কয়েকটি উপ-কমিটি করলে কাজের সমন্বয় করা সহজ হবে। উপ-কমিটিগুলি হচ্ছে- অভ্যর্থনা কমিটি, সাজসজ্বা কমিটি, আইন শৃংখলা কমিটি, আপ্যায়ন কমিটি, অর্থ কমিটি, প্রচার ও প্রকাশনা কমিটি, অডিট কমিটি প্রভৃতি প্রত্যেক উপ-কমিটির একজন আহ্বায়ক ও কয়েকজন সদস্য থাকবে। মূল কমিটি উপ-কমিটির কাজ তদারকি করবেন। সারাদিন কাজের অগ্রগতি মূল কমিটির কাছে ব্যাখ্যা করবেন উপ-কমিটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি ও সম্মানিত আলোচকবৃন্দকে একটি পত্র দিয়ে দাওয়াত দেওয়া যেতে পারে।
দাওয়াত পত্রের নমুনা নিচে দেওয়া হলো–
শ্রদ্ধাভাজন,
……………………..
……………………..
সালাম নেবেন। আগামী ১৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা গৌরীপুর শাখা শিশুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে আপনাকে প্রধান অতিথি/বিশেষ অতিথি/আলোচক হিসেবে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করছি। আপনার সম্মতি আমাদের একান্তভাবে কাম্য।
সভাপতি সাধারণ সম্পাদক
গৌরীপুর শাখা গৌরীপুর শাখা
কোন শাখার জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা বা কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নন্বর সিটের নমুনা
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা …………………..শাখা
আয়োজিত জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক বাছাই প্রতিযোগিতা
বিষয় : ……………………… বিভাগ : …………………….
পূর্ণমাণ-১০০
প্র্রতিযোগী নং | প্রতিযোগীর নাম | তাল/লয়/সুর/কণ্ঠ/উপ— | প্রাপ্ত নন্বর |
১ | সুফিয়া আক্তার | ৪০ | |
২ | মৃদুল কান্তি | ৫৯ | |
৩ | হাসিনা খানম | ৬০ | |
৪ | জোবায়দা আক্তার | ৬১ | |
৫ | স্বর্ণা ঘোষ | ৫৯ |
বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর
প্রতিযোগিতায় চূড়ান্তভাবে বিজয়ীদের নাম রেকর্ড রাখার সিটের নমুনা
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে
জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
…………….. শাখার বাছাই পর্বে চূড়ান্তভাবে বিজয়ীদের নাম
বিষয় | প্রতিযোগী | বিভাগ | স্থান |
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান | শরীফ উদ্দিন পলাশ | ক | ১ম |
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান | রোখসানা আহমেদ পাপিয়া | খ | ১ম |
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান | বিলকিস বেগম মোনা | গ | ১ম |
বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর বিচারকের স্বাক্ষর
স্বাক্ষর স্বাক্ষর
সভাপতি সাধারণ সম্পাদক
………….. শাখা ………….. শাখা
পাঠাগার বিষয়ক কার্যক্রম
শিক্ষা কার্যক্রমের উন্নয়ন ও প্রসারে পাঠাগারের গুরুত্ব অপরিসীম। পাঠাগার গঠনে প্রাথমিক উদ্যোগ থেকে একটি বিশাল পাঠাগার গঠন করা যায়। মফস্বল পর্যায়ে যে কোন পাঠাগার শিক্ষা কার্যক্রম উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার ৯৭ সনের জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কেন্দ্র থেকে শাখা পর্যায়ে “বঙ্গবন্ধু পাঠাগার” গঠন কল্পে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই প্রস্তাব করেন বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা সাবেক প্রধান বিচারপত্রি কামাল উদ্দিন হোসেন। সেই প্রস্তাবে পাঠাগার গঠনের প্রক্রিয়া ও সুফল প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরা হয়। উপস্থিত সারাদেশের প্রতিনিধিবৃন্দ এই প্রস্তাব সমর্থন করে পাঠাগার গঠনের লক্ষ্যে নিজেদের উৎসাহ প্রকাশ করেন। সারাদেশের শাখা সমূহে আর্থিক কারণে প্রস্তাবিত শাখা গড়ে না উঠলেও কিছু কিছু শাখা পর্যায়ে পাঠাগার গড়ে উঠেছে।
পাঠাগারের স্থান: নিজস্ব জায়গায় পাঠাগার গড়তে পারলে খুবই ভাল হয়। তবে নিজস্ব জায়গা না থাকলেও ভাল পরিবেশে যে কোন স্থানে পাঠাগার গড়ে তোলা যাবে। পাঠাগার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি করলে ভাল হয়। তাতে ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠাগারে এসে বই সংগ্রহ করে পড়তে পারে অথবা আর্থিক অসুবিধা হলে সংশ্লিষ্ট শাখার কোন কর্মকর্তা বা উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষকের বাড়ীতে একটি কক্ষে বুক সেলপ বা আলমারী রেখে প্রাথমিকভাবে পাঠাগার গড়ে তোলা যায়। পাঠাগারের সদস্য করে পাঠকদের কাছে বই সরবরাহ করা যেতে পারে।
পাঠাগার পরিচালনা কমিটি: পাঠাগার পরিচালনা ও অর্থায়নের জন্য একটি আলাদা পরিচালনা কমিটি বা উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষক কমিটি করা যেতে পারে। এতে শুধু পাঠাগার পরিচালনা ও পাঠাগার উন্নয়নের ক্ষেত্রে কমিটি ভূমিকা রাখবে। পাঠাগারের জন্য আলাদা অর্থের ব্যবস্থা করা হতে পারে পাঠাগার পরিচালনা কমিটির কাজ।
পাঠাগারের বই সংগ্রহ: পাঠাগারের জন্য বইয়ের একটি তালিকা তৈরী করে প্রাথমিক পর্যায়ে কী ধরণের বই সংগ্রহ করতে হবে তা ঠিক করতে হবে। পাঠাগারের বইগুলো হতে হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ইতিহাস, প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা, ছড়া ও আলোকচিত্রের বই, শিশু কিশোরদের গল্পের বই, বিভিন্ন পাঠ্যবই, বিশিষ্ট লেখকের পাঠ্যপযোগী বই, বিভিন্ন উচ্চতর বই, বিভিন্ন ভর্তি গাইড বই, সাজেসনস, ইংরেজী-বাংলা অভিধান। এমনকি দৈনিক সংবাদপত্র ও শিশু কিশোর উপযোগী সাময়িকী রাখা যেতে পারে। এসব বই বা প্রকাশনা পাঠাগারে রাখা হলে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী পাঠাগারমুখী হবে। বই পড়তে আস্তে আস্তে অভ্যস্থ হবে। অনেক ছাত্র-ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে কলেজের ভর্তির জন্য বিভিন্ন ভর্তি গাইড বইয়ের সাহায্য নিয়ে থাকে। সবার পক্ষে বাজারে প্রকাশিত সবগুলো গাইড বই কেনা সম্ভব নয়। পাঠাগারে কয়েকটি গাইড বই রাখা হলে ছাত্র-ছাত্রীরা উপকৃত হবে। এছাড়া উচ্চতর বিভিন্ন লেখকের বই রাখা হলে ফলাফলের জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই নোট তৈরী করতে পারবে। এভাবে পাঠাগার যে কোন এলাকায় শিশু কিশোরসহ যে কোন বয়সী পাঠকের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করবে। তবে পাঠাগার গঠনে প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে বই সংগ্রহ করতে হবে: পাঠাগার গঠনের প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণের পর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, পরিচালনা কমিটির প্রত্যেকে একটি করে তালিকাভুক্ত বই পাঠাগারে কিনে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে পাঠাগার এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্বের কাছে বইয়ের নাম লিখে দিয়ে বইগুলো কিনে পাঠাগারে দান করার অনুরোধ জানানো যেতে পারে। একটি দরখাস্তের মাধ্যমে বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছে বইয়ের নাম উল্লেখ করে পাঠাগারের বইয়ের জন্য আবেদন জানানো যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার কাছ থেকে খুব কম মূল্যে বই পাওয়া যেতে পারে।
আবেদন পত্রের নমুনা
শ্রদ্ধেয় ……………….
………………………
………………………
সালাম নেবেন। আপনি শুনে আনন্দিত হবেন, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা গৌরীপুর শাখা এলাকার শিশু কিশোর ও ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে “বঙ্গবন্ধু পাঠাগার” গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উক্ত পাঠাগারের জন্য আপনার পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত বইগুলো সংগ্রহের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
অত্র এলাকার শিশু কিশোরদের শিক্ষার মান উন্নয়নে এই পাঠাগার অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতা আমাদের একান্তভাবে কাম্য।
বইগুলোর তালিকা:
(১) ভাষার লড়াই- ডঃ মোঃ হান্নান (২) বাঙ্গালীর চিন্তা চেতনায় বিবর্তন ধারা- আহমদ শরীফ (৩) বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ- জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী (৪) লালন ফকির ও তার গান- অন্নদাশংকর রায়
ভাপতি সাধারণ সম্পাদক
গৌরীপুর শাখা গৌরীপুর শাখা
পাঠাগার খোলার সময়: প্রতিদিন বিকেলে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল কলেজে ক্লাশ শেষে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাঠাগার খোলা রাখার নিয়ম চালু করা যেতে পারে। ঐ সময়ের মধ্যে সবাইকে পাঠাগারে বই পড়তে বা সংগ্রহ করতে আসতে হবে।
পাঠাগারের নিরাপত্তা: “বঙ্গবন্ধু পাঠাগার”-এর নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় এ ব্যাপারে সর্বদা সতর্ক থাকা অত্যধিক জরুরী।
সাহিত্য বিষয়ক কার্যক্রম
সাহিত্য থেকে সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমের উৎপত্তি। যেমন সাহিত্য থেকে নাটক, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ নিয়মিত সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে শিল্প সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় লেখক। এজন্য নিয়মিত সাহিত্য আসরের আয়োজনের মাধ্যমে শিশুদের মধ্য থেকে তৈরী হবে আগামী দিনের খ্যাতনামা সাহিত্যিক, কবি, প্রবন্ধকার, নাট্যকার গীতিকার। তাই রীতিমত শাখাগুলো সাপ্তাহিক, পাক্ষিক বা মাসিক সাহিত্য সভার আয়োজন করলে সংগঠনের কর্মী বা শিশু কিশোররা স্বরচিত কবিতা, সংগীত, গল্প, ছড়া রচনায় আগ্রহী হয়ে উঠবে। সাহিত্য সভায় বিষয় ভিত্তিক সাহিত্যের উপর আলোচনা হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে লেখকরা পারদর্শী হয়ে উঠবে এবং শব্দ চয়ন, উচ্চারণ বানানের ব্যাপারে সচেতন হবে। এছাড়া শাখা থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিনে নতুন লেখক হিসেবে তাদের রচিত লেখা স্থান পেলে তারা সাহিত্য চর্চায় আরো উৎসাহী হবে। এছাড়া সাহিত্য সম্পাদক, সংগঠনের শিশু কিশোরদের রচিত লেখাগুলো বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় শিশু সাহিত্য সংখ্যায় প্রেরণ করতে পারে। রীতিমত সাহিত্য সভার আয়োজনের মাধ্যমে একজন সাহিত্যিক গড়ে উঠার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।
ক্রীড়া বিষয়ক কার্যক্রম
বর্তমান আধুনিক সময়ে খেলাধূলা নতুন প্রজন্মের কাছে খুবই জনপ্রিয়। একজন পারদর্শী খেলোয়াড় বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করতে পারে খুবই কম সময়ে । এ জন্য যে কোন সংগঠনের সমধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত। আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল, ক্রিকেট। এছাড়া ভলিবল, হকি, বাস্কেট বল, হা-ডু-ডু, শুটিংও মোটামুটি জনপ্রিয়। শিশু কিশোররা সবচেয়ে বেশী যে খেলাটির প্রতি আগ্রহী সেই খেলা দিয়ে শিশু কিশোরদের প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট খেলার জন্য একজন প্রশিক্ষকের ব্যবস্থা করে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে একজন ভাল খেলোয়াড় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার যে কোন শাখা থেকে তৈরী হতে পারে। তবে প্রশিক্ষণের ব্যাপারে শাখাকে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক নির্দিষ্ট খেলার মাঠের ব্যবস্থা করে নিয়মিত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। প্রশিক্ষণে খেলোয়াড়েরা খেলায় মোটামুটি পারদর্শী হলে যে কোন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরী করতে হবে। অথবা প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে দুটি গ্রুপ করে মাঝে মাঝে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত। তাহলে খেলোয়াড়দের মধ্যে উৎসাহ অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এতে ভাল খেলোয়াড় হবার অনুপ্রেরণা পাবে। মেলার পক্ষ থেকে ক্রীড়া বিষয়ক যে কোন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা যেতে পারে।
সমাজসেবা বিষয়ক কার্যক্রম
আমাদের সমাজে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের বাস। ধনী, গরীব, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণী একই সমাজে বসবাস করে পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে সকলের মাঝে। মানুষ সামাজিক জীব এই সত্যকে মেনে চলে ধনিক শ্রেণী বা গরীব শ্রেণীর মধ্যে আর্থিক বিষয়ে প্রার্থক্য থাকলেও একই সমাজে আমরা বসবাস করি। ফলে পরস্পরের সুখে দুঃখে আমরা পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াই। মানব সভ্যতার আদি যুগ থেকে মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা স্বীকৃত এই স্বীকৃত সত্যটিকে মেনে চলে আমরা এই সমাজে বসবাস করি। আমাদের সমাজে সমস্যার কোন শেষ নেই। আবার এই সমস্যা আমরাই সমাধানে এগিয়ে আসি। সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে কেউ নিজের জীবন পর্যন্ত বির্সজন দিতে কুণ্ঠিত হয় না। যাঁরা নিজের সুখের চিন্তা না করে সমাজে বসবাসরত সমস্যায় জর্জরিত কোন মানুষের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। ঐ সকল সমাজ সেবক মৃত্যুর পরেও মানুষের মাঝে বেঁচে অমর হয়ে থাকেন। সমাজে মানুষের কল্যাণের অনেক কাজ রয়েছে, যেমন দুঃস্থদের সাহায্য, অসুস্থ রোগীদের রক্তদান, অনাথ ও গরীবদের সহযোগিতা, সমাজের নিরক্ষরতা দূরীকরণ, পরিবেশ সংরক্ষণ, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ভূমিকা, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, এমনকি সমাজের অর্থনৈতিক মুক্তি। এইসব সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধনী থেকে গরীব শ্রেণী আমরা সমাজভূক্ত হয়ে বাস করি। কেউ না কেউ যে কোন সমস্যায় আবর্তিত হয়। এই সমাজের এই সমস্যা সমাধানে যারা ভূমিকা রাখেন সমাজে তাদের সমাজ সেবক হিসেবে জানি।
সমাজের এসব সমস্যা সমাধান ও কল্যাণে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কর্মীদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। যেমন দূর্যোগ মোকাবেলায়, নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচী, গরীবের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, রাস্তাঘাটের মেরামত এসব জনকল্যাণমূখী কার্যক্রমে সংগঠনের কর্মীদের সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। একজন মুমূর্ষ রোগী রক্তের জন্য মৃত্যু যখন অনিবার্য হয়ে উঠে এক্ষেত্রে ঐ মুমূর্ষ রোগীর মৃত্যু ঘটে। আর্থিক কারণে রক্ত কিনে দেওয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। এক্ষেত্রে সংগঠনের কর্মীদের পূর্বে নিজের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে নিতে হবে। সকলের রক্তের গ্রুপের একটি তালিকা তৈরী করে রাখলে যখন কোন মুমূর্ষ রোগীর রক্তের প্রয়োজন হয় তখন সহজে রক্ত দিয়ে একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব। এছাড়া অনেক গ্রামে বা প্রত্যন্ত এলাকায় ভাল চিকিৎসক না থাকায় এলাকার মানুষেরা সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। কোন শাখা উদ্যোগ নিলে মাসে বা সপ্তাহে এলাকায় একজন ডাক্তারের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেয়া যেতে পারে। এছাড়া যখন বন্যা, সাইক্লোনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয় তখন বিশুদ্ধ পানির অভাব হয়। ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয় নিরীহ মানুষ। এমনকি খাবারের অভাব দেখা দেয় যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে। ঠিক ঐ মুহূর্তে মানুষের কল্যাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থাৎ সাহায্য সংস্থা, ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে, সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে পানি বিশুদ্ধকরণ টেবলেট, ওরস্যালাইনসহ বিভিন্ন ঔষধপত্রের ব্যবস্থা করে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করতে পারে। এই সমাজের সেবামূলক কাজের মধ্য দিয়ে মানবতার যেমন সেবা করা হয় তেমনি একটি সংগঠন মানুষের কল্যাণে, সমাজের কল্যাণে যে ভূমিকা রাখে তা জনগণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের দীর্ঘদিন মনে থাকে।
নিকটাত্মীয়দের প্রতি সামাজিক ভূমিকা:
আমরা সমাজবদ্ধ হয়ে যাদের নিয়ে বাস করি তারা আমাদের প্রতিবেশী। আবার কেউ নিকটজন। একজন ব্যক্তি বা তার পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা থাকার পরও শতভাগ সুখী বা সমস্যাহীন বলা যাবে না। এর প্রধান অন্তরায় হচ্ছে সমাজভূক্ত অন্য যারা রয়েছে তারা বিভিন্ন সমস্যায় নিপতিত। বিভিন্ন সমস্যায় প্রতিবেশী বা নিকটাত্মীয় জর্জরিত হলে এর প্রভাব একজন সুখী মানুষ বা পরিবারের উপরও প্রভাব পড়ে। যেমন সামপ্রতিককালে আত্মীয় স্বজন কর্তৃক নিকট আত্মীয় আধিক্য পরিলক্ষিত। এর প্রধান কারণ আর্থিক অসচ্ছলতা। প্রতিহিংসা অভাবগ্রস্থ পরিবার বা ব্যক্তির মাঝে জন্ম নেয়। কেননা ওরা সচ্ছল, ওরা ভাল বলে ভাল খায়, অথচ আমি বা আমরা তখন নিকটাত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও তাদের সুখে শান্তিতে বসবাস সহ্য করতে পারে না। ফলে প্রতিশোধমূলক অঘটন ঘটে যায়। এজন্য আপনার নিজের সন্তানের প্রতি যে স্নেহ মমতা আপনার রয়েছে, অন্ততঃ আপনার নিকট আত্মীয় বা সন্তানদের সহযোগিতা করে, স্নেহ দিয়ে, তাদের সমস্যা যতটুকু সম্ভব সমাধান করে নেয়া প্রয়োজন। তাহলে আপনার ও আপনার পরিবারের প্রতি আপনার নিকটাত্মীয়দের প্রতিহিংসা পরায়ণতা কমে যাবে। আপনি তখন সুখী হিসেবে বসবাস করতে পারবেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার ভূমিকা
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা সারাদেশে বিস্তার লাভের মধ্যে দিয়ে শিশুদের প্রিয় সংগঠন হবার কারণ শিশুদের জন্য সাংস্কৃতিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান করা। যাতে শিশুরা আনন্দবোধ করে। আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আমরা মুক্তিযুদ্ধের ৩১ বছর পর আজও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারিনি। বন্যা, খরা, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে ফসল বিনষ্ট হলে এদেশের মানুষের অনেকের ক্ষুধা নিবারণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই আজ দেশের অধিকাংশ কৃষি নির্ভর মানুষের মধ্যে অনেকে কৃষি কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় নিযুক্ত হয়েও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেনি। ফলে ক্ষুধা ও দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটে। কিন্তু আমাদের দেশের বৃহত্তম দরিদ্র জনগোষ্ঠী জীবনের সাথে যুদ্ধ করে এক প্রকার জীবনে বেঁচে আছে। এই জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে যাতে নিজেরা সচল হয়ে উঠতে পারে, সে ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতা করা যায়। যেন সংগঠনের মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বিভিন্ন কুটির শিল্প, হস্ত শিল্প, টেকনিক্যাল কাজে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে অন্ততঃ দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা করার উপায় খঁজে নিতে পারবে। এমনকি বৈজ্ঞানিক পন্থায় কৃষিকাজের উন্নয়ন করেও অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব।
দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সফলও হয়েছিলেন। কৃষি উন্নয়নের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিরসনকল্পে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় দেশ খাদ্যে স্বয়ঙ সম্পূর্ণতা অর্জন করে। এছাড়া দেশের গ্রামীণ জনপদে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভর করে অর্থনৈতিক মুক্তি লাভের লক্ষ্যে “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী উদ্ভাবন করেন। “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী গ্রামীণ জনপদে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন আনে। অর্থনৈতিকভাবে মুক্তি লাভ করে তারা বেঁচে থাকার উপায় খুঁজে পায়। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা অর্থনৈতিক উন্নয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্ভাবিত “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী অনন্য কর্মসূচী বলে মনে করে। ফলে এই কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে কাজ করছে। এই কর্মসূচী অর্থনৈতিক উন্নয়নে কী রকম ভূমিকা রাখে তা নিচের প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
একটি বাড়ী একটি খামার কর্মসূচী বাস্তাবায়নে
বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ কর্মসূচী
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার শাখা সমূহের মাধ্যমে ইতিমধ্যে একটি জরীপ চালানো হয়েছে বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে। যেখানে মেলার সক্রিয় সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক রয়েছে। জরীপে দেখা গেছে শতকরা ৮০ ভাগ বাড়ীর আশে পাশে অনাবাদী জায়গা বিদ্যমান। এসব জায়গায় একমাত্র অর্থ, বীজ ও চারার দুষপ্রাপ্যতার কারণে অনেকে বাড়ীর আঙ্গিনায় সব্জি চাষ, হাঁস মুরগী পালন করতে উৎসাহ পায় না। অনেকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে বাড়ীর আঙ্গিনায় আবাদযোগ্য বীজ, চারা, হাঁসমুরগী পালনের প্রয়োজনীয় উপকরণ পেলে সকলে বাড়ীর আঙ্গিনাকে আবাদী করে একটি আদর্শ খামার হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা শাখা সমূহের মাধ্যমে সারাদেশের উপজেলা ভিত্তিক বাড়ীর আঙ্গিনায় আবাদযোগ্য বীজ ও চারা বিতরণ কর্মসূচী হাতে নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও এই বিশাল কর্মসূচী পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করে এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার পক্ষে এককভাবে সম্ভব নয়। তবে এই কর্মসূচী বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হিসেবে প্রমাণ করতে পারলে সরকারসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সমাজকর্মী, এনজিওসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই কর্মসূচী গ্রহণে উৎসাহী হবে। তখনই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা কর্তৃক জননেত্রী শেখ হাসিনার “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী বাস্তবায়নে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ কর্মসূচী স্বার্থকু পদক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে।
২০০০ বাড়ীতে বীজ ও চারা বিতরণ করে সাফল্য পাওয়া যাবে।
যদি একটি উপজেলার ২০০০ বাড়ীতে বীজ বিতরণ করে ন্যূনতম ১০০০ বাড়ীকে খামার হিসেবে গড়ে তোলা যায় তাহলে ১০০০ বাড়ী থেকে পাওয়া যাবে ১০০০ x ৫০০ = ৫,০০,০০০/= (পাঁচ লক্ষ) টাকার শাক সব্জি। যার জন্য খরচ = ২,২০,০০০/= টাকা।
যদি বাংলাদেশের সকল উপজেলার প্রতিটি বাড়ীকে আবাদযোগ্য করা যায় তাহলে এই সাফল্যের মূল্যায়ন হবে এভাবে, এদেশ এখন পুরোপুরি খাদ্যে স্বয়ঙ সম্পূর্ণ। তাই আমরা আশা করি, বঙ্গবন্ধুর শিশু কিশোর মেলা জননেত্রী শেখ হাসিনার “একটি বাড়ী একটি খামার” কর্মসূচী বাস্তবায়নে যে বীজ ও চারা বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করেছে, এই কর্মসূচী সারা দেশব্যাপী ধারাবাহিকভাবে অক্ষুন্ন রাখতে পারলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে এদেশের জনগোষ্ঠী। এই প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার প্রতিটি শাখা ও কর্মী কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে পরিচিতি অর্জন করা সকলের ইচ্ছে হয়। আর শিশু সংগঠন বলে এর প্রয়োজনীয়তা আরো গুরুত্ব বহন করে। বিভিন্ন দেশে শিশু বিষয়ক সংগঠন রয়েছে। এক দেশের শিল্প সংস্কৃতি সম্পর্কে অন্য দেশের শিশুরা অবগত হলে নিজেদের আন্তর্জাতিক পরিচিতি অর্জনে সচেষ্ট হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এদেশের শিশুরা সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচীর মাধ্যমে এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবে। এজন্য বিভিন্ন দূতাবাসের মাধ্যমে সে দেশের শিশু কিশোর বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সেতুবন্ধন রচনা করা যায়। এতে শিশুদের মানসিক বিকাশের উন্নতি ঘটবে। শিশু কিশোররা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে সে দেশের শিশুদের সাথে সেতুবন্ধন গড়ে তুলে নিজেদের গড়ে তুলবে। এজন্যে বিভিন্ন দেশে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার শাখা গঠন করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের দেশের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আরো একটি কারণে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার বিসতৃতি ঘটানো প্রয়োজন। এই প্রযুক্তির যুগে আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। যে কোন দেশের জনগণ অন্য দেশের স্বাধীনতা সংস্কৃতির ইতিহাস জানতে চায়। সে দেশের নতুন প্রজন্মের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠলে আমাদের গৌরবগাঁথা ইতিহাস তাদের কাছে জানাতে পারা যাবে। তখন তাঁরা বাঙালির এই বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা শুনে আমাদের বীরত্ব পূর্ণ স্বাধীনতার দলিল ও স্বাধীনতার স্থপতিকে জানতে উৎসাহী হয়ে উঠবে। ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগে পাওয়া এই বাংলাদেশের বর্তমান এই দূর্দশার কথা জানতে পেরে হয়তো একদিন বিশ্বের সচেতন জনগণ আমাদের এই দেশটিকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতার হাত বাড়াবে। তাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেলার শাখা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয় অপরিসীম।
চারুকলা বিষয়ক কার্যক্রম
যে কোন শিশুরা স্কুলে যাওয়া আসার শুরু থেকে অংকনের প্রতি অত্যধিক আগ্রহী হয়ে উঠে। যে কোন ছবি বা দৃশ্য দেখে ওরা পুলকিত হয়। কলম বা পেনসিল পেলে যেন সেই ছবিটি অংকনের চেষ্টা করে। এজন্য অত্যন্ত ছোটকাল থেকে শিশুদের অংকনের প্রশিক্ষণে অভ্যস্থ করলে একদিন ওরা সফল শিল্পী হিসেবে গড়ে তুলবে নিজেদের। এ জন্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে শিশুদের চারুকলা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন। যে স্থানে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনা হয় সেই স্থানেই শিশুদের জন্য ছবি আঁকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শিশুরা কিছুদিন ছবি আঁকার পর পারদর্শী হয়ে উঠলে মাঝে মাঝে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা জরুরী (তাতে শিশুরা ছবি অংকনে নিজেকে মনোনিবেশ করবে)। এছাড়া অংকিত ছবির ভাল ছবিগুলো মাঝে মাঝে বিভিন্ন উপলক্ষে প্রদর্শনীর আয়োজন করলে শিশুদের মাঝে ছবি আঁকার উৎসাহ আরো বৃদ্ধি পাবে।
তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কার্যক্রম
বর্তমানে সময়টা হচ্ছে সারা বিশ্বব্যাপী তথা প্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন কাজে গতি সঞ্চার হয়েছে। অফিস আদালত, শিল্পায়ন, ব্যবসা বাণিজ্য তথ্যের আদান প্রদান সংবাদ পরিবেশন, প্রভৃতি এখন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজের অনেক সহজতর করা হয়েছে। এ জন্যে যে কোন সংগঠনের সাংগঠনিক কাজেও গতি সঞ্চারের জন্য তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর হওয়া উচিত। সংগঠনের আদর্শ উদ্দেশ্য সংগঠনের ওয়েভ সাইডে প্রচারিত হলে উৎসাহীগণ সংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য খুঁজে পাবে। এতে সংগঠনের প্রসার ঘটবে।
সংগঠনের উন্নয়নে বিভিন্ন পর্যালোচনা করে মতামত প্রদানই গবেষণা। এর ফলে নতুন নতুন কর্মসূচী প্রণয়ন ও কর্মসূচী সফলভাবে সমাপ্ত করার উপায় খুঁজে পাওয়া যায়। এসব উপাত্ত সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। গবেষণা সংগঠনের কাজের ভাল ও মন্দ দিকগুলো পর্যালোচনা করে ভূলত্রুটি সংশোধন করার সুযোগ তৈরী হয়।সংগঠনকে আধুনিকীকরণ করার প্রয়োজনে বিভিন্ন দেশের শিশু সংগঠনের কার্যক্রমকে তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিশুদের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণয়ন কর্মসূচী নেয়া হয়ে থাকে।
* আমরা সজিব আমরা মুজিব
* আমি আমার নই আমি পরের আমি মায়ের নই আমি দেশের
* আমরা সোনার বাংলা গড়ার যোগ্য প্রতিনিধি হবো
* আমরা স্বাধীনতার দাবীদার আমরা জাতির পিতার উত্তরসূরী
* আমরা শান্তির পৃথিবী গড়ে তুলবো
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কর্মীদের প্রতি নির্দেশাবলী
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা শিশু সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও এদেশের জনকল্যাণে ও ভূমিকা রাখছে সমানভাবে। সারা দেশে অগনিত কর্মী বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে তাদের সাংগঠনিক কাজে। আমরা আশা করি বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সেবা পেয়ে একজন শিশু বা কিশোর একজন সক্রিয় কর্মীতে পরিণত হবে। তারপর আদর্শের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একদিন সোনার মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে নিজেকে। এই স্পৃহা সংগঠনের প্রতিটি কর্মীর। সংগঠনের সকল স্তরের কর্মী এই মনমানসিকতায় সম্পৃক্ত হয় যে কোন শাখায়। তারপর সংগঠনের নিয়মাবলী মেনে বলে সোনার মানুষ হবার খুঁজে পায় আপন ঠিকানা। যে মানুষের সেবা করে, সত্যের চর্চা করে, বাঙ্গালীর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটায়। আর নিজ দেশের উন্নতির লক্ষ্যে নিজেকে গড়ে তুলে সুনাগরিক হিসেবে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষায় সে-ই “সোনার মানুষ”।
বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কোন কর্মী এমন কোন কাজ করে না, যা নৈতিকতা বিরোধী, মানবতার বিপক্ষে। এই সংগঠনের প্রতিটি কর্মী সত্য প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকে প্রতিনিয়ত। আমাদের লক্ষ্যই একটি, যে চেতনায় এদেশ স্বাধীনতা হয়েছে, সেই চেতনায়, এদেশের অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটানো। এ জন্যে প্রত্যেক কর্মীকে সংগঠনের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কাজ করতে হবে। সংগঠনের যে কোন স্তরের কর্র্মীকে মেনে চলতে হবে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সকল নিয়মাবলী।
যারা শিশুদের প্রতিভা বিকাশে ভূমিকা রাখতে চায়, যারা শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতির চর্চায় অভ্যস্ত, যারা মানবতার জন্য সেবা করতে ইচ্ছুক, যারা বাঙ্গালীর সংস্কৃতি মেনে চলে এবং অসমপ্রদায়িকতায় বিশ্বাসী, যে কর্মী নম্র ভদ্র ও বিশ্বাসী গুণের অধিকারী একমাত্র তারাই এই সংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করতে যোগ্যতা বহন করে। তাই যে কোন কর্মী এই সংগঠনের পতাকা তলে সমবেত হবার আগে বা কোন এলাকায় কোন উৎসাহী ব্যক্তি এই সংগঠন করার পূর্বে আপনি যে এলাকায় শাখা গঠন করতে চান সেই এলাকার উধ্বর্তন শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধপত্র এবং আপনি শাখা গঠন করার উপরোক্ত যোগ্যতা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ঠিকানায় সভাপতির বরাবরে আবেদন করতে হবে। আপনার সম্পূর্ণ বায়োডাটাসহ আবেদন পত্র পেয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি আপনার আবেদন পত্র বিবেচনা করে শাখা গঠন করার অনুমতি স্বন্বলিত কাগজপত্র উর্ধ্বতন শাখার মাধ্যমে বা সরাসরি আপনার বরাবরে পাঠানো হবে। তারপর গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় অনুমোদন লাভের পর শাখার কাজ শুরু করতে হবে। অনেকের প্রশ্ন আসতে পারে তাতে ব্যক্তিগত কি সাফল্য বা মূল্যায়ন পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে গঠনতন্ত্রে বিস্তারিত উল্লেখ থাকলেও বলতে চাই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কোন কর্মী ব্যক্তি স্বার্থের প্রয়োজনে কখনো কাজ করে না। এমনকি দীর্ঘদিন এই সংগঠনের সেবা করার পর কেউ কোন ফায়দা পাওয়ারও সুযোগ নেই। জাতির জনকের নামে এই সংগঠন কাজ করলেও এই সংগঠনের সাথে রাজনৈতিক কোন সম্পৃক্ততা নেই। ফলে এই সংগঠনের কর্মীরা নিজেকে শিশু কিশোরদের কল্যাণে নিয়োজিত করে।
যারা এই সংগঠনের নতুন দায়িত্ব নেবেন, তাদেরকে অবশ্যই এই প্রতিজ্ঞায় দায়িত্ব নিতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে। কোন ধরনের রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধার অভিপ্রায় হওয়ার কোন সুযোগ নেই। বলা যায় একজন শিশু সংগঠক হিসেবে শিশুদের জন্য কল্যাণমূলক কাজ করে শিশুদের মাঝে বেঁচে থাকা বড় পাওনা মনে করতে হবে। তাতে আগামীদিনের ভবিষ্যত আজকের প্রজন্ম নিজেদের নীতিবান, আদর্শবান হিসেবে গড়ে উঠবে। আপনার কার্যক্রম তাদের প্রেরণা যোগাবে। শিশু কিশোররাও একদিন নিজেকে গড়ে তুলবে আপনার আদর্শ নিয়ে। তাতে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে। সংগঠনের প্রত্যেক কর্মী অর্থাৎ একটি শাখার সকল কর্মকর্তা, সদস্য সদস্যা পরস্পরের মধ্যে রীতিমত যোগাযোগ রাখা খুবই জরুরী। এতে কারো ব্যক্তিগত সমস্যার খবর জানা সহজ হবে। এছাড়া সংগঠনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত হবে এমন যে কেউ ইচ্ছে পোষণ করলে তার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে। প্রাথমিক পর্যায়ে উক্ত উৎসাহী কর্মীকে সংগঠনের কার্যক্রম বা গঠনতন্ত্র সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। যাতে সংগঠন সম্পর্কে একটি ধারণা পায়। সংগঠনের যে কোন স্তরের কর্মীকে মিষ্টভাষী, নীতিবান, সজ্জ্বন ব্যক্তি হিসেবে অন্যের কাছে পরিচিত হওয়া উচিত। সংগঠনের অনেক কর্মী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা যেহেতু অরাজনৈতিক সংগঠন সেহেতু কোন রাজনৈতিক সংগঠনে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করা একটু কঠিন বটে। তবে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কাজে কোন রাজনৈতিক আচরণ না থাকলেই চলবে। বরং বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা যায়। যে কাজটি আমাদের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কোন কর্মকর্তা কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেলার সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হলে অনেকেই কার্যক্রমে অংশ নেবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিমনা ছাত্র-ছাত্রীর অংশ নেবার সুযোগ হবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার কোন শিল্পী স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ভর্তি হলে স্বাভাবিকভাবে কলেজেও একই আদর্শের পক্ষে নিজের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য “কোচিং ইউনিট” করা যায়। এই কোচিং ইউনিট পরিচালনার জন্য কয়েকজন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে কোচিং প্রশিক্ষণ প্যানেল করা যেতে পারে। এর ফলে গরীব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা ভাল ফলাফল করার প্রয়াসে কোচিং ইউনিটের সেবা গ্রহণে উৎসাহী হবে। কোচিং ইউনিটের পরিচালনাকারী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের। তারাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংগঠনের পক্ষে কাজ করতে উৎসাহী হয়ে উঠবে। এভাবেই বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার ধারাবাহিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বস্তরে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে এবং মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা জ্ঞান অর্জন করে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এগিয়ে আসবে। তখন আমাদের এই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি অবশ্যম্ভাবী
কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাষ্ট কর্তৃক অনুমোদিত
রেজিঃ ঢ-০৬১৮০
কেন্দ্রীয় কার্যালয়- ৩৯, শান্তিবাগ, ঢাকা-১২১৭।